সন্তানকে নিয়ে যখন একজন মা বাবা কোনো সিদ্বান্ত গ্রহণ করবেন তখন প্রথম বিবেচনায় রাখতে হবে “আপনি তার হয়ে অর্থাৎ আপনার শিশুর হয়ে সিদ্ধান্ত টি নিচ্ছেন” সিদ্বান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে আর বিষয়গুলো হলো: যত্ন ও পরিচর্যা, শিশুর বিকাশ, সুস্বাস্থ্য (মা ও শিশুর), নিরাপত্তা, শিখন শিক্ষন।শিশু নবজাতক অবস্থায় এক ধরনের পরিচর্যার দরকার ঠিক তেমন বাড়ন্ত বয়সেও পরিচর্যা দরকার হয়, যেমন ধরুন: ২ মাস বয়সে ঘন ঘন বুকের দুধ পান বা ফিডিং করাবেন আর ২ বছর বয়সে ডাইপার ছেড়ে পটি ট্রেনিং করবেন। পার্থক্য তাহলে কোথায় শিশুর বেড়ে ওঠা আর আপনি বুড়ো হওয়া এবং প্রথম সন্তানের পর ১ বছর বা ২ বছরের মধ্যে যদি আরেকটি বাচ্চা হয়ে যায় কারন আপনি যদি তাদের ১০০% যত্ন চান তাহলে নিজের এবং পরিবারের অনেকের সাথে সুসম্পর্ক নষ্ট হবে, মেজাজ খুটমিটে থাকবে “কি হলো আর কি করলেন জীবনে ” এই বিষয় নিয়ে। আর স্বামীদের তো কথা বাঁধ দিলাম কারন তারা ডোনার হিসেবে অনেক বড়ো কাজ করেছে সুতারং তারা অনেক বিশেষ একটি চিন্তাভাবনার মধ্যে থাকবে “আমি পারি, আমার উত্তরসুরী আসছে”. যারা ভালো মনের তারা বৌকে একটু বোঝাতে চায় যে “আমি তোমাকে ভালোবাসি” কিন্তু সত্য কথা হলো এই কথাটা আরও বিষময় মনে হয়।শিশুকে আপনি যত্ন করবেন না ডে কেয়ার/অন্য কোন কেয়ার এ দেবেন? কর্মজীবী মা অবশ্যই শিশুর প্রথম কেয়ারার কিন্তু তিনি শিশুর যত্নের বেশিরভাগ সময়টি দিতে পারবেন না সেক্ষেত্রে মা বাবাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শিশুর ডেভেলপমেন্টাল মাইলস্টোন ঠিক রেখে কাজ হচ্ছে কিনা।উন্নত বিশ্ব সরকার শিশুর সব দ্বায়িত্ব যেমন নিয়ে থাকে ঠিক তেমনি একটু “এদিক ওদিক” হলে শিশুকে মা বাবার কাজ থেকে নিয়ে যেতে একটুও দ্বিধাবোধ করে না। এই বিষয় নিয়ে আরেকদিন লিখবো।শিশু যখন আপনার সাথে থাকবে অর্থাৎ ফুলটাইম আপনি তার যত্ন ও পরিচর্যা, শিশুর বিকাশ, সুস্বাস্থ্য (মা ও শিশুর), নিরাপত্তা, শিখন শিক্ষন এই সব দায়িত্ব নিচ্ছেন তখন আপনাকে অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে হবে, যেমন: শিশুর কোন বয়সে কি করা উঠিত আর না করলে সে শিশুকে কিভাবে আপনি সাহায্য করবেন।উন্নত দেশে ৩বছর বয়স থেকে প্রি স্কুল(দিনে ৩ঘন্টা) শিশুর বাধ্যতামূলক আর যে পরিবার এর চাহিদা আছে তাদের জন্য ২বছর থেকে বাধ্যতামূলক, দিনে ৩ঘন্টা সপ্তাহে ১৫ঘন্টা।একক পরিবারের অনেক মা শিশুর ভালো বিকাশ স্বার্থে শিশুর জন্মের প্রথম তিনটি বছর চাকরিতে যান না কিন্তু ৩ঘন্টা করে ডেকেয়ার এ পাঠান নিজ খরচে কারন ওই তিন ঘন্টা তিনি তার নিজের যত্ন নিয়ে থাকেন। সব কিছুর একটি সিস্টেম আছে এখানে কিন্তু বাংলাদেশ এর দিকে তাকালে আমরা কি দেখতে পাই ; ডে কেয়ার এর কর্মীদের সীমিত জ্ঞান, মা বাবা ও সীমিত জ্ঞান।যেহেতু লেখালেখি ও ভিডিও করি এর সুবাধে অনেক ডে কেয়ার এর মালিকরা ফোন দেয়, কথা হয়। দুংখজনক হলেও সত্য, মা বাবা এবং কর্মী কারো মাঝে শিশুর জন্য শিশুতোষ এবং পরিবেশবান্ধব পরিবেশ নেই আর মন মানসিকতা তো অনেক দূরে থাক।সুতারং আপনি আপনার শিশুকে ডে কেয়ার বা অন্য কেয়ার বা নিজের কেয়ার যেখানেই রাখুন না কোনো আপনাকে শিশুর যত্ন ও পরিচর্যা, শিশুর বিকাশ, সুস্বাস্থ্য (মা ও শিশুর), নিরাপত্তা, শিখন শিক্ষন সম্পর্কে জানতে হবে। যদি না জানেন তাতে আমার বা এই পেজ যারা চালাচ্ছে তাদের কোন ক্ষতি নেই বরং লাভ আছে কারন আপনাদের উল্টোপাল্টা প্যারেন্টিং এর জন্য আপনারা আসবেন আমাদের কাছে।সর্বোপরি আখিরাত বা বেহেস্ত, পৃথিবীর সুখ যদি না পান তাহলে পরবর্তী চিন্তা কেন করছেন, রাষ্ট্র আপনাকে বলছে আপনি শিশুকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে পারবেন না কিন্তু আপনি করছেন, আল্লাহ আদেশ আমাদের মাথার উপর অবশ্যই সবাইকে মেনে চলতে হবে কিন্তু আপনি তো পৃথিবীতে আপনার রাষ্ট্র এর কথা মানছেন না, আপনি নিজের প্রয়জনে ক্ষনে ক্ষনে পরিবর্তন করছেন আপনার চিন্তাকে নিজের স্বার্থের উপর নির্ভর করে, যেখানে সুবিধা সেটাই আল্লাহ বলেছেন বলে দাবি করছেন কিন্তু খুব সাধারণ একটা কথা আল্লাহ বলেছেন ”কষ্ট না দিতে” আমি অন্য কারো কথা বলছি না আপনি নিজেকে ও নিজের সন্তানকে কষ্ট দেবেন না প্লিজ, সবকিছুর একটি ব্যালান্স করে চলুন। এমনটি করবেন না সন্তানকে যত্ন নিতে গিয়ে নিজেকে বা স্বামীকে ভুলে যাওয়া, আবার রান্নার/লাইভ ব্লগ চ্যানেল দেখতে গিয়ে শিশুকে অবহেলা করা.nবাকিটা আপনাদের মর্জি। ভালো থাকবেন।